Motorola Moto G85 Review – যেনে নিন দাম সহ খুঁটিনাটি সব বিষয়

Moto G85 মিড রেঞ্জের ফোনের বাজারে একটি অসাধারণ ডিভাইস। এর সুন্দর ডিজাইন, উজ্জ্বল P-OLED ডিসপ্লে, শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং ভালো মানের ক্যামেরা সিস্টেম একে ব্যবহারকারীদের জন্য দারুণ একটি পছন্দ বানিয়েছে। যদিও এতে NFC এবং Wi-Fi 6 এর মতো কিছু ফিচার নেই, তবুও এর দামের তুলনায় এটি প্রযুক্তি প্রেমী এবং সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য চমৎকার একটি ফোন

হার্ডওয়্যার/ পারফরমেন্স

• প্রসেসর – Snapdragon 6s Gen 3
• মেমরি – 12GB পর্যন্ত
• স্টোরেজ – 256GB পর্যন্ত

Motorola Moto G85 5G Qualcomm Snapdragon 6s Gen 3 (6nm) চিপসেট দ্বারা চালিত, যা সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। এটা আগের মডেল Moto G84 এর চিপসেট থেকে এগিয়ে আছে। যেখানে Moto G84 স্মার্টফোন Qualcomm SM6375 Snapdragon 695 5G দ্বারা চালিত হয়েছিলো। যদিও Motorola Moto G85 5G এর প্রসেসর ভারী গেমিং এর সময় এর পারফোরম্যান্স ধীর হতে পারে। তবে এটি মাঝারি গেমিং, মেসেজিং, ওয়েব ব্রাউজিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য কোনও সমস্যা ছাড়াই কাজ করে।

এই স্মার্টফোনে RAM 8GB বা 12GB পর্যন্ত হতে পারে এবং 256GB স্টোরেজ রয়েছে। আবার তা যা মাইক্রোএসডি স্লটের মাধ্যমে বাড়ানো সম্ভব। এর RAM বুস্ট প্রযুক্তি রয়েছে, যা RAM ক্ষমতা বাড়িয়ে 12GB-এর পরিবর্তে আরও বেশি RAM প্রদান করে। আর এটি UFS 2.2 স্টোরেজ প্রযুক্তি তে চলে যা একটি উন্নত, দ্রুত এবং দক্ষ স্টোরেজ প্রযুক্তি। এটি আগের UFS 2.1 প্রযুক্তির তুলনায় দ্রুততর এবং আরও নির্ভরযোগ্য।

Motorola Moto G85 5G-এর GPU- এ কোন পরিবর্তন আসেনি। তার পূর্বসূরীর ন্যায় মিড রেঞ্জের GPU Adreno 619 ব্যবহার করা হয়েছে যা গ্রাফিক্স পারফরম্যান্স, গেমিং, এবং ভিজ্যুয়াল এক্সপিরিয়েন্সে উন্নত সুবিধা দেয়। তবে GPU একই হলেও চিপসেট ও RAM প্রযুক্তির পার্থক্যের কারণে Motorola Moto G85 5G পারফোরম্যান্সে বেশ শক্তিশালী ও উন্নত আধুনিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

Motorola Moto G85 5G-এর চিপসেটের সঙ্গে LPDDR5 RAM সাপোর্ট করে, যা পূর্ববর্তী মডেলের LPDDR4x RAM এর তুলনায় দ্রুততর। এটি অ্যাপ লোডিং টাইম, মাল্টিটাস্কিং এবং গেমিং পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আনে। এটি বিশেষত মাল্টিটাস্কিং, গেমিং, এবং AI নির্ভর অ্যাপ চালানোর সময় স্পষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

ডিজাইন

• ডিমেনশন্স – 161.91×73.06×7.59 মিমি
• ওজন – 172 গ্রাম
• রঙ – অলিভ গ্রিন, কোবাল্ট ব্লু, আরবান গ্রে

Moto G85 5G এর সাথে তার আগের মডেলের সব চেয়ে বড় পার্থক্য হলো এর কার্ভড ডিসপ্লে। তাছাড়া এটি অতিরিক্ত স্লিম এবং হালকা হওয়ায় ব্যবহার করে বেশ আরাম পাওয়া যায়।

Moto G85-এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের একটি মসৃণ এবং দ্রুত টাচ রেসপন্স প্রদান করে। এর উপরের গ্লাস Corning Gorilla Glass 5 ব্যবহার করা হয়েছে যা বেশ ভালো সুরক্ষা প্রদান করে। এটি একটি প্লাস্টিকের ফ্রেম সহ পিছনে ভেগান লেদার সমন্বিত স্মার্টফোন। প্লাস্টিকের ফ্রেম এটিকে লাইট ওয়েট বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে। পেছনে একটি মেটালিক ফিনিশ রয়েছে যা দেখতে অত্যন্ত প্রিমিয়াম। তবে লং রানে এর পিছনে ময়লা আটকে যাওয়ার আশংকা থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে কেসিং ব্যবহার করা ভালো।

স্মার্টফোনের উপরে একটি পাঞ্চ হোল করা আছে, যেখানে একটি সেলফি ক্যামেরা আছে। এর ফলে স্ক্রীনটি প্রায় বেজেল-হীন এবং এর উপরের অংশে কোনো বড় নচ বা ছিদ্র নেই। এতে ফোনটি দেখতে আধুনিক এবং ক্লিন। নিচে আল্ট্রা সেন্সর এর ফিঙার প্রিন্ট রয়েছে যা উন্নত সিকিউরিটি প্রদান করে। এর নির্দিষ্ট কোন আইপি রেটিং নেই, তবে মটোরোলা একে “ওয়াটার-রেপেলেন্ট ডিজাইন” হিসেবে উল্লেখ করেছে, যার কারণে জল ও ধুলা হতে সাধারণ সুরক্ষা পাওয়া যায়।

Moto G85-এর নিচে একটি স্পিকার গ্রিল এবং একটি ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট রয়েছে, তবে Moto G84-এর মতো 3.5 মিমি অডিও পোর্ট নেই। উপরের অংশে একটি মাইক্রোফোন আছে, যার পাশে ডলবি অ্যাটমস লোগো দেখা যায়। একটি হাইব্রিড সিম ট্রে রয়েছে, যেখানে একটি ন্যানো সিম কার্ড এবং মাইক্রোএসডি কার্ড ঢুকানো যায়। আবার চাইলে ডুয়েল সিম ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তাছাড়া এর স্ট্যান্ডার্ড বাজন সজ্জা রয়েছে যা বেশ মজবুত। তবে প্লাস্টিক ফ্রেমের সাথে বাটন সজ্জা চিপ লুক মনে হতে পারে। একপাশে নীচে পাওয়ার বাটন ও উপরে ভলিউম বাটন গুলো খুব স্লিম এবং প্লাস্টিকি ফিল দেয় হাতে। যে কারণে এর প্রিমিয়ানেস এখানে কিছুটা কম লাগতে পারে।

ডানপাশে রকার বাটন এবং পাওয়ার বাটন রয়েছে যা দ্রুত ডিভাইস টি অন/অফ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর সংযুক্ত, যা দ্রুত এবং সুরক্ষিত আনলক নিশ্চিত করে।

এর ব্যাক সাইডে একটি ইউনিক মটোরোলা-র ক্লাসিক “M” লোগো রয়েছে যার কারণে এটি কোম্পানির নিজস্বতা ক্যারি করে। এর ডুয়েল ক্যামেরা সিস্টেম অন্যান্য কিছু মিড-রেঞ্জ ফোনের মতো নয়, যেখানে ক্যামেরা সেন্সর রিংগুলি ফোনের বডি থেকে বেরিয়ে আসে, Moto G85-এর ক্যামেরা ডিজাইন প্রায় সমতল, যা ডিভাইসটিকে আরও মার্জিত করে তোলে। ক্যামেরার দুটি একটা মেইন সেন্সর অন্যটি আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর, সাথে একটি LED ফ্ল্যাশ লাইট রয়েছে।

ডিসপ্লে

• ডিসপ্লের আকার: 6.67 ইঞ্চি
• ডিসপ্লের প্রকার: P-OLED
• রিফ্রেশ রেট: 120Hz
• উজ্জ্বলতা: 1600 নিট পিক, 1200 নিট উচ্চ
• স্ক্রিন-টু-বডি অনুপাত: 93% এর বেশি
• রেজোলিউশন: ফুল HD+

Moto G85-এ 6.7 ইঞ্চি P-OLED ডিসপ্লে রয়েছে, যা অনেক ভালো ভিউইং অভিজ্ঞতা দেয়। এতে রয়েছে Corning Gorilla Glass 5 সুরক্ষা, DCI-P3 কালার গ্যামুট এবং 1600 নিট ব্রাইটনেস, যা সরাসরি সূর্যালোকেও ভালোভাবে দেখা যায়। ডিসপ্লে 120Hz রিফ্রেশ রেটের কারণে খুবই স্মুথ, আর UI এবং অ্যাপগুলো খুব দ্রুত রেসপন্স করে। রঙগুলি কোণ থেকেও জীবন্ত এবং পরিষ্কার দেখায়। ফোনটি Widevine L1 সাপোর্ট করে, যার মানে HD ভিডিও স্ট্রিমিং করা যায়। এছাড়া, ডিসপ্লে SGS চোখের সুরক্ষা প্রযুক্তি এবং কাস্টমাইজযোগ্য রঙ প্রোফাইলসহ আসে, যা চোখের জন্য আরো আরামদায়ক। ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারটি দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করে, ফোনটি দ্রুত আনলক হয়।

বাস্তব ব্যবহারের ক্ষেত্রে, G85-এর ডিসপ্লে পুরোপুরি একটি ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মতো অনুভূতি প্রদান করে। এর রিফ্রেশ হার, সঠিক রঙ এবং চমৎকার ভিউইং কোণ G85 ব্যবহারে সত্যিই আনন্দদায়ক।

সফটওয়ার

• হ্যালো UI
• স্মার্ট কানেক্ট
• কাস্টমাইজেশন
• ব্লোটওয়্যার

Moto G85 এর শক্তিশালী ও আধুনিক সফটওয়ারের জন্য বাজারের সেরা ফোন গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ফোন।

এই স্মার্টফোনে নতুন Hello UI রয়েছে, যা Motorola এর আগের My UX থেকে বেশ কিছু ভিন্ন। Hello UI আরও উন্নত এবং সহজ ব্যবহারযোগ্য, এবং এতে বেশ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ এবং কাস্টমাইজযোগ্য করে তোলে।

Moto G85 স্মার্টফোন Android 14 দ্বারা পরিচালিত এবং এর উপর কাস্টম Motorola স্কিন রয়েছে। মটোরোলা এখানে একটি স্টক Android UI ব্যবহার করেছে যেখানে খুব বেশি কাস্টমাইজেশন করে নি। যা একটি সহজ এবং ক্লিন সফটওয়ার ডিজাইন বলা যেতে পারে। স্টক Android ব্যবহারকারীদের কাছে এটা বেশ জনপ্রিয় কারণ এখানে ব্লোটওয়্যার বা অপ্রয়োজনীয় কোন এপ ব্যবহার করা হয় নি। এটি একটি দরকারী স্টক Android বৈশিষ্ট্য সমন্বয়ে গঠিত যা অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিয়ে থাকে। তাছাড়া মটোরোলা ২ বছরের সফটওয়ার আপডেট দিবে বলে জানিয়েছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার আনন্দদায়ক হবে।

ক্যামেরা

• প্রধান ক্যামেরা: 50 মেগাপিক্সেল (OIS, EIS), 4K/ 60fps পর্যন্ত ভিডিও
• আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা: 8 মেগাপিক্সেল, 1080p/30fps পর্যন্ত ভিডিও
• সেলফি ক্যামেরা: 16 মেগাপিক্সেল, 1080p/30fps ভিডিও পর্যন্ত

Motorola G85 এর পিছনে একটি ডুয়াল-ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে, যেখানে অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (OIS) সহ একটি 50MP Sony LYT-600 প্রাইমারি সেন্সর এবং একটি সেকেন্ডারি আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরা রয়েছে। যা ম্যাক্রো শ্যুটার হিসাবে দ্বিগুণ। সেলফি তোলার জন্য রয়েছে 32 এমপি এর একটি ফ্রন্ট ক্যামেরা।

Moto G85 5G এর ক্যামেরার মেগাপিক্সেল এবং লেন্স সেটআপ মোটামুটি আগের মতোই, তবে কিছু পরিবর্তন রয়েছে। Moto G85 5G-এর পিছনের ক্যামেরায় একই ডুয়াল লেন্স ও মেগাপিক্সেল রয়েছে। তবে, Moto G85 5G-এ ফ্রন্ট ক্যামেরা আপগ্রেড করা হয়েছে, যেখানে 32MP ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়েছে, যা আগের Moto G84 5G-এর 16MP ক্যামেরার তুলনায় দ্বিগুন মেগাপিক্সেল এর ।

Moto G85-এ একটি নাইট ভিশন মোড রয়েছে যা রাতে আরও ভালো ছবি তুলতে দেয়, তবে এটি শুধুমাত্র প্রধান ক্যামেরার সাথে কাজ করে। OIS (অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন) অস্পষ্টতা কমাতে সহায়তা করে। এর আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা ম্যাক্রো মোড ব্যবহার করে ছোট বিষয়গুলির খুব কাছাকাছি ডিডেইলস সহ ছবি তোলার সুবিধা দেয়। দিনের বেলায় অর্থাৎ পরিষ্কার আলোতে ছোট বস্তুর ছবি তোলা হলে তা ডিডেইলসসহ স্পষ্ট ছবি ক্যাপচার করে।

লো লাইট বা নাইট মুডে এটি কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, পোর্ট্রেট ফটোগুলি ভালো দেখায়, ত্বকের রঙ সঠিকভাবে তুলে ধরে এবং এজ ভালোভাবে চিহ্নিত করে। তাছাড়া পোর্ট্রেট মুডে সাবজেক্ট ও ভালোভাবে ডিডেক্ট করে। আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরার পারফরম্যান্স আরও ভালো হতে পারত, কারণ কিছু শটে HDR (হাই ডাইনামিক রেঞ্জ) সঠিকভাবে কাজ করেনি, তবে সাধারণত এর পারফরম্যান্স দামের তুলনায় ঠিক আছে।

32 MP এর সামনের ক্যামেরা দিয়ে দিনের বেলা স্পষ্ট ছবি আসে, কিন্তু রাতে বা কম কম আলোর সেলফিগুলি কিছুটা ঝাপসা হয়।

প্রাথমিক ক্যামেরা এবং আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা ব্যবহার করার সময় Moto G85 1080p/30fps এ রেকর্ডিং সাপোর্ট করে। একই ভিডিও রেজোলিউশন এবং বিটরেট সামনের ক্যামেরাতেও হয়ে থাকে। ক্যামেরা অ্যাপ যথেষ্ট স্ট্যাবল ভিডিও করতে দেয় এবং প্রধান ক্যামেরা প্রতিটি পরিস্থিতিতে সেরা ভিডিও গুণমান প্রদান করে।

AI ফিচার

• ম্যাজিক এডিটর এবং ম্যাজিক এরেসার
• AI ক্যামেরা প্রযুক্তি
• জেন-এআই ইমোজি

Moto G85 স্মার্টফোনে আধুনিক AI ফিচার রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা আরো উন্নত ও আনন্দায়ক করে। এতে ম্যাজিক এডিটর এবং ম্যাজিক এরেসার ফিচার রয়েছে, যা গুগল ফটোসের মাধ্যমে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। যা ছবির এডিটিংকে আরো চমক প্রদ করে।

সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য এবং সুবিধাজনক ফিচার রয়েছে ক্যামেরায় AI প্রযুক্তি ব্যবহারে। এর দ্বারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন পরিবেশ ও আলোর পরিস্থিতি কাস্টমাইজেশন করার মাধ্যমে দুর্দান্ত ছবি ক্যাপচার করা যায়।

Moto G85-এ জেন-এআই ইমোজি ফিচার রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের জন্য পছন্দের ইমোজিগুলোর স্টাইল, থিম এবং এক্সপ্রশন তৈরি করে দেয়। যা ব্যবহারকারীদের কাছে আরো মজাদার ও চিত্তাকর্ষক করে।

কানেক্টিভিটি

• 5G ব্যান্ড
• ওয়াইফাই
• ব্লুটুথ 5.1
• VoNR
• NFC
• সিম স্লট

Moto G85 একটি ডুয়াল-সিম 5G ডিভাইস, যা উভয় সিম স্লটে SA এবং NSA সাব-6 5G নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে। স্থানীয় সংযোগের জন্য, G85 ডুয়াল-ব্যান্ড Wi-Fi 5 (ac) এবং Bluetooth 5.1 LE সাপোর্ট করে। এটি একটি FM রেডিও রিসিভার এবং NFC সাপোর্ট করে, তবে এগুলি বাজার-ভিত্তিক এবং আপনার স্থানীয় বিক্রেতার সাথে চেক করতে হবে। অবস্থান নির্ধারণের জন্য, G85-এ GPS, GLONASS এবং GALILEO সাপোর্ট রয়েছে।

Moto G85-এ টাইপ-সি পোর্ট রয়েছে যা USB 2.0 ডেটা সংযোগ সাপোর্ট করে, যার ফলে 480 Mbps এররসর্বাধিক স্থানান্তর গতি পাওয়া যায়। USB OTG/হোস্ট সাপোর্ট আছে, তবে দুর্ভাগ্যবশত, ভিডিও আউটপুটের মতো কোনও অতিরিক্ত সুবিধা নেই। তবে, Moto Connect ফিচারটি G85-ইনক্লুড রয়েছে, যা Miracast এর মাধ্যমে ওয়্যারলেস ডিসপ্লেতে সংযোগ করার সুবিধা দেয়।

অডিও ভিডিও

• ডিসপ্লে: 120Hz রিফ্রেশ রেট সহ 6.67-ইঞ্চি P-OLED
• অডিও: ডলবি অ্যাটমস স্টেরিও স্পিকার
• HDR: সাপোর্ট নেই

Moto G85-এ একটি স্টেরিও স্পিকার সিস্টেম রয়েছে যা উন্নতমানের সাউন্ড প্রদান করে। এতে ডলবি অ্যাটমস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা চারপাশের শব্দের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে এবং সিনেমা বা গেমিংয়ের সময় বিশেষভাবে উপযোগী।

স্পিকারগুলো উচ্চ ভলিউমেও ভয়েস স্পষ্টতা বজায় রাখে। তবে, যারা বেস-সমৃদ্ধ মিউজিক পছন্দ করেন, তাদের জন্য কম ফ্রিকোয়েন্সি আউটপুট কিছুটা কম হতে পারে। তা সত্ত্বেও, সিনেমা বা টিভি শো দেখার জন্য স্পিকারগুলোর পারফরম্যান্স বেশ ভালো।

ডিভাইসটি অতিরিক্ত স্লিম হওয়ায় এতে হেডফোন জ্যাক নেই। তাই ওয়্যারলেস ইয়ারবাড বা USB-C অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করেই হেডফোন কানেক্ট করতে হবে।

ভিডিও প্লেব্যাকের ক্ষেত্রে, Moto G85 একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এর 120Hz রিফ্রেশ রেট এবং 1,600 নিট পর্যন্ত উজ্জ্বলতা ভিডিও দেখা আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। এই উচ্চ উজ্জ্বলতা এবং মসৃণ রিফ্রেশ রেট ব্যবহারকারীদের ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করে। তবে ডিভাইসটিতে HDR সাপোর্ট না থাকায় উচ্চমানের কিছু কনটেন্ট উপভোগে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।

সিকিউরিটি

• ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর
• ফেস আনলক
• মোটো সিকিউর
• নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট

Moto G85-এর সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষা এবং প্রাইভেসি নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য, মটরোলা তার Moto G85 স্মার্টফোনে চার বছরের নিরাপত্তা প্যাচ প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে, যার কারণে এটি আরো সিকিউরিটি আপডেট পাবে এবং ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা প্রদানে আরো শক্তিশালী হবে।

এই স্মার্টফোনে রয়েছে Moto Secure ফিচার যা ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি পরিচালনা, অ্যাপ পারমিশন নিয়ন্ত্রণ এবং সংবেদনশীল ডেটার জন্য সিক্রেট ফোল্ডার তৈরি করার সুবিধা দেয়।

তাছাড়া এতে রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। এতে ডিভাইসের নিচের স্ক্রিনে অবস্থিত অপটিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর দ্রুত এবং নিরাপদ লক আনলকিং নিশ্চিত করে। তাছাড়া রয়েছে সফটওয়ার ভিত্তিক ফেস আনলক সিস্টেম। যা ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং ডিভাইসটি ব্যবহারকারীর মুখ শনাক্ত করে, যা দ্রুত এবং সুবিধাজনক লক আনলকিংয়ের সুযোগ দেয়। তবে অবশ্যই তখন পূর্ণ আলোর দরকার হয়।

ব্যাটারি এবং চার্জিং

• ক্ষমতা: 5000mAh
• চার্জিং: 33W দ্রুত চার্জিং

Moto G85 এর স্লিম ডিজাইন এর সাথে একটি 5,000mAh ব্যাটারি রয়েছে, যা এক দিনের বেশি ব্যাটারি লাইফ দিতে সক্ষম। মাঝারি ব্যবহার যার মধ্যে দৈনন্দিন গেমিং, হোয়াটসঅ্যাপে টেক্সট করা এবং ওয়েব বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ব্রাউজ করা অন্তর্ভুক্ত। এটি চার্জারের সাথে আবার সংযোগ করার আগে এটি প্রায় 6 ঘন্টা স্ক্রীন সময়মতো এবং স্ট্যান্ডবাই মোডে প্রায় 20 ঘন্টা সরবরাহ করে থাকে। এটা ভারী ব্যবহারের পুরো দিন ধরে সহজেই চলতে পারে এবং প্রয়োজনে দ্রুত রিচার্জ করা যায়।

Motorola G85 5G এর USB-C পোর্টের মাধ্যমে তারযুক্ত 33W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। এটা শুধুমাত্র ভারতীয় ভেরিয়েন্টে, এবং আন্তর্জাতিক ভেরিয়েন্টে তারযুক্ত 30W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। উল্লেখ্য এই মডেলের সাথে কোম্পানি একটি চার্জার দিয়ে থাকে। অন্তর্ভুক্ত চার্জার ব্যবহার করে মাত্র 37 মিনিটের মধ্যে ফোনটি 0 থেকে 50% পর্যন্ত চার্জ করা যায়। একটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় 90 মিনিট সময় লাগে, যা এই দামের সীমার অন্যান্য স্মার্টফোনের সমান।

এই ডিভাইসে Moto Unplugged ফিচার রয়েছে যা বিভিন্ন সেটিংস এবং অপ্টিমাইজেশান অন্তর্ভুক্ত করে। এটা ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে, ফোন চার্জের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী হয় তা নিশ্চিত করে৷

ব্যাটারি লাইফের জন্য এটি একটি নির্ভর যোগ্য ডিভাইস। ব্যবহারকারীদের কাছে এটি একটি আদর্শ পছন্দ। যা তাদের চাহিদাপূর্ণ জীবনধারার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

প্রাইসিং

Motorola G85 একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি মোবাইল যা বৈশিষ্ট্য ও মূল্যের কারণে মিড-রেঞ্জ সেগমেন্টে একটি আকর্ষণীয় পছন্দ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Motorola G85 দুইটি ভেরিয়েন্টে এবং দুইটি ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে পাওয়া যায। এই ভেরিয়েন্টগুলো ব্যবহারকারীদের স্টোরেজ এবং পারফরম্যান্সের চাহিদা অনুযায়ী বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।

ভেরিয়েন্টগুলো হচ্ছেঃ

• 8/128GB, বাংলাদেশে অফিসিয়াল মূল্য 30,239 ৳ এবং আনঅফিসিয়াল মূল্য 26,300 ৳
• 8/256GB, বাংলাদেশে অফিসিয়াল মূল্য 32,719 ৳ এবং আনঅফিসিয়াল মূল্য 27,500 ৳
• 12/256GB, বাংলাদেশে অফিসিয়াল মূল্য 34,719 ৳ এবং আনঅফিসিয়াল মূল্য 29,200 ৳

তবে এর মূল্য পাইকারী ও খুচরা বিক্রয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট এবং অফার অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। যেহেতু এই সকল স্মার্ট ফোনের মূল্য বাড়ে/কমে ,সুতরাং ক্রয় করার আগে বিশস্ত ওয়েবসাইটে এর ফিচার ও মূল্য তালিকা দেখে নেওয়া উচিত

রেকমেন্ডেশন

Moto G85 ফোনটি নতুন ইউজারের কাছে প্রথম বাজেট-ফ্রেন্ডলি, কিন্তু প্রিমিয়াম ফিলের ডিভাইস, যা আমি উপভোগ করার মতো! এর ডিজাইন ও ফর্ম ফ্যাক্টর খুবই ভালো লাগার মতো। তবে লং রানে খুব যে টেকসই হবে তা কিন্তু নাও হতে পারে। কর্নিং গরিলা গ্লাসের ফোন গুলো সাবধানে ব্যবহার করতে হয়, ড্রপ রেজিস্টেন্সে এতো টা ভালো হবে না, তাই কেসিং ব্যবহার করতে হয়।

দামের কথা বিবেচনা করলে দামের তুলনায় এর ক্যামেরাগুলো বেশ ভালো। তবে প্রসেসর একটু পুরানো (SD695-এর রিব্র্যান্ডেড ভার্সন), যা ফটো তোলার পর গ্যালারিতে পুরোপুরি লোড হতে ১-২ সেকেন্ড সময় নেয়। এই ছাড়া পুরো UI দারুণ স্মুথ, এবং ভারী অ্যাপ চালানোর সময় খুব কমই কোনো সমস্যা হয়। শুধু ভিডিও অটোপ্লে বন্ধ রাখতে হয়।

এই ফোনটিকে মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং মুভি দেখার জন্য ব্যবহার করার জন্য পারফেক্ট এবং দারুন। ফোন হিসেবে এর পারফরম্যান্সও ভালো। সুতরাং ভারী গেমিং এর অপশন সেক্রিফাইস করে এই ফোন টিকে পছন্দের তালিকায় রাখা ই যায়!